চীনের বিরুদ্ধে শক্তি বাড়াচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-অস্ট্রেলিয়া

অনির্বান ভৌমিক | Dec 11, 2019 08:59 am
চীনের বিরুদ্ধে শক্তি বাড়াচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-অস্ট্রেলিয়া

চীনের বিরুদ্ধে শক্তি বাড়াচ্ছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র-জাপান-অস্ট্রেলিয়া - ছবি : সংগৃহীত

 

ভারত শিগগিরই ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার লক্ষ্যে কয়েক বছর আগে নতুন করে সূচিত চার জাতির উদ্যোগ কোয়াডের অপর তিন অংশীদারের- যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া- সাথে তার সামরিক লজিস্টিক বিনিময় করার জন্য আলাদা আলাদা চুক্তি করবে।

ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা সোমবার নয়া দিল্লিতে তৃতীয় ‘২+২ সংলাপ’ এবং দৃশ্যত ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের সামরিক আগ্রাসনের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ‘বিরাজমান আঞ্চলিক নিরাপত্তা উদ্বেগ’ নিয়ে আলোচনা করেন। ভারত গত ৩০ নভেম্বর জাপানের সাথে প্রথম ‘২+২ সংলাপ’ করে। এতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং স্বাগতিক জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিতসু মোতেগি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী তারো কোনো অংশ নেন। আর জয়শঙ্কর ও সিং ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দ্বিতীয় ‘২+২ সংলাপ’-এ অংশ নেবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইও ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পারের সাথে বসে।

ভারতীয় ও অস্ট্রেলিয়ার কর্মকর্তারা সোমবার সামরিক লজিস্টিকসগুলো ব্যবহার নিয়ে তাদের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর কাঠামো নির্ধারণের জন্য একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করার সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন। আগামী মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার অস্ট্রেলিয়ান প্রতিপক্ষ স্কট মরিসনের মধ্যে যে বৈঠক হওয়ার কথা আছে, সেখানে চুক্তিটি হতে পারে বলে সোমবার একটি সূত্র ডিএইচকে জানিয়েছে। আগামী ১৪-১৭ ডিসেম্বর জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবের আমন্ত্রণে জাপান সফরকালে টোকিওর সাথে ‘অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (এসিএসএ)’ নামে পরিচিত একই ধরনের চুক্তি করতে পারেন নরেন্দ্র মোদি।

ভারত ২০১৬ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘লজিস্টিকস এক্সচেঞ্চ মেমোরেন্ডাম অব এগ্রিমেন্ট (এলইএমওএ)’ নামে একটি চুক্তিতে সই করেছে। নয়া দিল্লি যদি টোকিও ও ক্যানবেরার সাথে একই ধরনের চুক্তিতে সই করতে পারে, তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী কোয়াডের চার দেশের (যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া) সাথেই লজিস্টিকস ব্যবহারের চুক্তিতে আবদ্ধ থাকবে। কোয়াড প্রথমে অস্তিত্বশীল হয় ২০০৭ সালে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই তা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর ২০১৭ সালের নভেম্বরে ম্যানিলায় এটি আবার আলোচ৭নায় আসে ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনের সম্প্রসারণবাদী আকাঙ্ক্ষা প্রতিরোধ করতে। এই চার দেশের সিনিয়র কূটনীতিকরা এরপর থেকে কয়েকবার বৈঠক করেছেন। ২৬ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করেন।

কোয়াডে সামরিক মাত্রা যোগ করতে ওয়াশিংটন, টোকিও ও ক্যানবেরার সাথে নয়া দিল্লির যোগদানের উদ্যোগটি দৃশ্যত চীনকে একটি বার্তা পাঠানোর লক্ষ্যে প্রণীত। উল্লেখ্য, ভারত জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছিল চীন। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিজয় গোখলে ও প্রতিরক্ষাসচিব অজয় কুমার সোমবার অস্ট্রেলিয়ার সাথে হওয়া ‘২+২ সংলাপে’ ভারতীয় দলের নেতৃত্বেক ছিলেন। ক্যানবেরার দলে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য সচিব যথাক্রমে ফ্রান্সেস অ্যাডামসন ও গ্রেগ মরিয়ার্তি।

এই বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুই দেশ দ্বিপক্ষীয়, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করার সাম্প্রতিক অগ্রগতিকে স্বাগত জানায়। দুই দেশের প্রতিনিধিরা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য মতবিনিময়ও করে।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ইস্যু করা আলাদা এক বিবৃতিতে বলা হয়, দ্বিপক্ষীয় প্রতিরক্ষা সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা শিল্প, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা উদ্বেগে সহযোগিতা করা। বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সামরিকায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছ অস্ট্রেলিয়া। ভারতও অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিকে (যা আসলে এই অঞ্চলে চীনের সামুদ্রিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে) জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের আহ্বানে যোগ দিয়েছে।

ডিএইচএনএস

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us