আয়া সোফিয়ার বাস্তবতা

ডক্টর এম এ আজীজ | Aug 11, 2020 08:29 pm
আয়া সোফিয়া

আয়া সোফিয়া - ছবি : সংগৃহীত

 

তুরস্কের ইস্তাম্বুলের আয়া সোফিয়া জাদুঘরকে মসজিদে রূপান্তর করায় বিশ্বব্যাপী অনেকে ‘কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন’। এরকম একটি দল বাংলাদেশেও দেখা যাচ্ছে। অথচ তারা জানেনই না, আয়া সোফিয়া ওয়াকফ করা মসজিদই; কখনোই জাদুঘর ছিল না। এক স্বৈরশাসক জোর করে কিছু দিন ওটাকে জাদুঘর বানিয়ে রেখেছিলেন মাত্র। সে ইতিহাস জানতে হলে খানিকটা পেছন ফিরে তাকাতে হয়।

আজকের তুরস্ককে দেখে কেউ কি ভাবতে পারবে, এই দেশটিই ১৯১৫ সাল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ববর্তী ৬৩৬ বছর এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা শাসন করত? তাদের অধীনে ছিল সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য (মক্কা ও মদিনা শরিফসহ)- জর্দান, আরব আমিরাত, সিরিয়া, ইরাক, কাতার, কুয়েত, ওমান, জেরুসালেমসহ সমগ্র ফিলিস্তিন। আরো ছিল ইউরোপের গ্রিস, সাইপ্রাস, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, ক্রিমিয়া, বুলগেরিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো, যুগোশ্লাভিয়া, বসনিয়া হারজেগোভিনা, রোমানিয়া ইত্যাদি। ছিল আফ্রিকার লিবিয়া, মিসর, সুদান, তিউনিসিয়া, ইরিত্রিয়া, আলজেরিয়া ইত্যাদি। তুরস্কই ছিল ওই সময়ের বিশ্বের একক পরাশক্তি, যাদের এককভাবে মোকাবেলা করার মতো কোনো শক্তি বিশ্বে ছিল না।

এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে। এ সময় ব্রিটিশ, ফ্রান্স ও রাশিয়ার যৌথ ষড়যন্ত্র ও শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে তুরস্ক তার বিশাল সাম্রাজ্য হারিয়ে ফেলে। তিন সাম্রাজ্যবাদী দেশ সমগ্র অটোমান সাম্রাজ্য নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয় এবং খিলাফত ধ্বংস করে। এরপর তুরস্কের মতো যোদ্ধাজাতিকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করে রাখার পাশাপাশি মদ জুয়া গানবাজনা ও নর্তকী দিয়ে প্রায় ৯০ বছর ঘুম পাড়িয়ে রাখা হলো। তারাই তুরস্ককে ‘ইউরোপের রুগ্ণ দেশ’ বলে উপহাস করা শুরু করেছিল।

এভাবে প্রায় ১০০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর তুরস্কের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থার আমূল পরিবর্তন করে তুরস্ককে এগিয়ে নিচ্ছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এরদোগান। সেই পরিবর্তন ও এগিয়ে যাওয়ার ধারায় আয়া সুফিয়া আজ আবার জাদুঘর থেকে পবিত্র মসজিদের মর্যাদা ফিরে পেল।
এক সময় ইস্তাম্বুল বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল। ৬০০ সালে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শাসক কনস্টান্টাইন ইস্তাম্বুলের বসফরাস প্রণালীর তীরে একটি চার্চ নির্মাণ করেন। চার্চটির নাম হাজিয়া সোফিয়া।

খ্রিষ্টান শাসকরা নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে লিপ্ত হলে চার্চটির চরম ক্ষতিসাধিত হয়। এইভাবে প্রায় ১০০ বছর পড়ে থাকে। অতঃপর মেরামত করে আবার প্রার্থনার উপযুক্ত করা হয়। ১৪৫৩ সালে সুলতান দ্বিতীয় আহমেদ ফাতেহের নেতৃত্বে মুসলিমদের সাথে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের খ্রিষ্টান শাসকদের যুদ্ধ হলো। যুদ্ধে খ্রিষ্টানরা পরাজয় বরণ করে এবং ইস্তাম্বুলের কর্তৃত্ব মুসলিমদের দখলে আসে। এ সময় খ্রিষ্টানদের অনেকে মুসলিম হয়ে যান, আবার কেউবা স্বেচ্ছায় ইস্তাম্বুল ছেড়ে চলে গেলেন। অবস্থা এমন দাঁড়াল যে, আয়া সোফিয়ায় প্রার্থনা করার মতো তেমন কোনো খ্রিষ্টান ছিল না। তখন সুলতান আহমেদ এটার পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ন্যায্যমূল্য দিয়ে নিজ নামে চার্চটি ক্রয় করে সেটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। কিছু দিন পর তিনি ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী একটি ট্রাস্ট গঠন করে তার মাধ্যমে ওয়াক্ফ করে দেন। এই ওয়াকফ করা সম্পত্তির খরচ বহনের জন্য তিনি তৎকালীন বার্ষিক ১৪ হাজার স্বর্ণ মুদ্রা আয়ের ব্যবস্থা করেন। মুসলিমরা ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় ৫০০ বছর এটিকে মসজিদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।

১৯১৫ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রাশিয়া, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও ইটালির যৌথ শক্তি তুরস্ককে পরাজিত করে গোটা সাম্রাজ্য ভাগ করে নিয়ে নেয়। এমনকি ইস্তাম্বুলও দখল করে নেয়। মোস্তফা কামাল সেনাবাহিনীতে ছিলেন এবং যৌথবাহিনীকে মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এই প্রস্তুতি দেখে যৌথ শক্তি ইস্তাম্বুল ছেড়ে চলে আসে। মোস্তফা কামাল তখন জাতির ‘হিরো’ হয়ে দাঁড়ান এবং সুলতান আবদুল মজিদকে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশ পরিচালনা করতে থাকেন। তিনি ‘আতাতুর্ক’ অর্থাৎ জাতির পিতা উপাধি ধারণ করেন।

কামাল ছিলেন নাস্তিক ও চরম ইসলামবিদ্বেষী। পশ্চিমা শক্তিগুলো এ কারণে সুযোগ পেয়ে তাকে ব্যবহার করে তুরস্কে মুসলিমদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়। আর কামালও ৫০০ বছরের ওয়াকফ করা মসজিদকে অন্যায় ও বেআইনিভাবে মিউজিয়ামে রূপান্তরিত করেন। সেই সময় তার এত প্রভাব ছিল যে, কেউ প্রতিবাদ করার সাহস করেননি। করলে হয় তাকে হত্যা করা হতো অথবা জেলে রাখা হতো।
মোস্তফা কামাল হাজার হাজার আলেমকে হত্যা এবং অনেক মসজিদকে মিউজিয়ামে পরিণত করেছিলেন। আরবিতে আজান দেয়া বন্ধ করেছিলেন। অফিস-আদালতে নামাজ পড়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন।

মাদরাসাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। আরবিতে নাম রাখা নিষিদ্ধ করেছিলেন। এক কথায় তুরস্কের মুসলিম ঐতিহ্য ও খিলাফতকে ধ্বংস করে প্রায় ৭০০ বছরের একটি শাসক জাতিকে পাশ্চাত্যের অনুসারী করার চেষ্টার কোনো ত্রুটি করেননি কামাল। তার অনুসারীরাও ক্ষমতায় বসে একই পথ অনুসরণ করেছেন।
অবশেষে শত বছর পর প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান এবং তার দল এ কে পার্টি ২০০২ সালে ক্ষমতায় আসার পর তুরস্কের অর্থনৈতিক, সামাজিক, নৈতিক ও ধর্মীয় দিক থেকে আমূল পরিবর্তন শুরু হয়। তুরস্কের বেশির ভাগ মুসলিম আয়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে ফিরে পেতে চাচ্ছিল। তাদের পক্ষ থেকে সিভিল সোসাইটি এ জন্য কোর্টে মামলাও করেছিল, যা বারবার খারিজ হয়ে যাচ্ছিল। কারণ, তখনো বিচারপতিদের এতটা সাহস হয়নি যে একটি সত্য রায় দেবেন।

পরিস্থিতির অনেক পরিবর্তন হওয়ার সাথে সাথে বিচারপতিদেরও সাহস তৈরি হয়েছে। কিছু দিন আগে একটি সিভিল সোসাইটি আয়া সোফিয়াকে মিউজিয়াম থেকে মসজিদে আবার বহাল করার জন্য কোর্টে মামলা করে। গত ১০ জুলাই বিচারপতিরা কামাল আতাতুর্কের ঘোষণাকে বেআইনি আখ্যা দিয়ে আয়া সোফিয়াকে তুরস্ক বিজেতা সুলতান মেহমেত ফাতিহের ওয়াকফ সম্পত্তি আইন অনুযায়ী মসজিদ হিসেবে চালু করার রায় ঘোষণা করেছেন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান কোর্টের রায় অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করছেন মাত্র।

আসুন এবার কিছু তিক্ত সত্য কথা জেনে নিই। পশ্চিমা জগতের কিছু রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা আয়া সোফিয়া জাদুঘরের জন্য ‘কুম্ভীরাশ্রু’ বর্ষণ করছেন। আমাদের মতে, এদের কারোই আয়া সোফিয়ার ইতিহাস জানা নেই। অথচ দীর্ঘ ৪৫ বছর পশ্চিমা জগতের কেন্দ্র লন্ডন শহরে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করছি। আমেরিকা কানাডা ছাড়াও ইউরোপের প্রতিটি দেশ সামাজিক কাজে বহুবার সফর করেছি। ইংল্যান্ডসহ ইউরোপ এবং কানাডা ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রসহ পাশ্চাত্যে বহু চার্চ বা গির্জা বন্ধ অবস্থায় আছে অথবা হওয়ার পথে। কারণ, এসব চার্চে প্রার্থনা করার যথেষ্ট লোক নেই। তারা বস্তুগত উন্নতির সাথে সাথে ধর্মবিমুখ চরিত্রহীন ভোগবিলাসী জাতিতে পরিণত হয়েছে।

অতএব অসংখ্য গির্জা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী বিশেষ করে মুসলিমরা ক্রয় করে মসজিদ বানিয়ে ইবাদত-বন্দেগি করছেন। পশ্চিমা দেশগুলোতে গত ১০০ বছরে মুসলিমদের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলছে। চার্চ ক্রয় করার অনেক সুবিধা। এসব দেশে কোনো কিছু করার জন্য সরকারের অনুমতি একান্ত প্রয়োজন। যেহেতু চার্চগুলো আগে থেকেই উপাসনালয় হিসেবে অনুমতিপ্রাপ্ত, তাই কোনো সমস্যা ছাড়াই মসজিদ করার অনুমতি পাওয়া যায়। কিন্তু নতুন করে কোনো মসজিদ বানাতে পারমিশন পেতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। তার পরও অনেক ক্ষেত্রে পারমিশন পাওয়া যায় না। অপর দিকে, চার্চের ধর্মীয় নেতারা বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে হলেও মুসলিমদের খুশি মনে দিয়ে দেন। কারণ, তারা মনে করেন এই চার্চকে অন্য কোনো কাজে লাগানো তথা ক্লাব, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি বানানোর চেয়ে ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করা অনেক ভালো। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এমন নীতিও আছে যে, ‘চার্চকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না’। অতএব এসব চার্চকে মসজিদ করার কারণে কোনো দুঃখ বা প্রতিবাদ দেখা যায় না।

অটোমান সুলতানের ক্রয় করার দলিল আজও তুরস্কের মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে।
বিজয়ী হিসেবে ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তুরস্কের সুলতান মেহমেত জোর করে আয়া সোফিয়া চার্চ কেড়ে নেননি, বরং বিশপ জেনাডিয়াসের সাথে আলোচনার মাধ্যমে নিজস্ব অর্থ দিয়ে তা ন্যায্যমূল্যে ক্রয় করে মসজিদ হিসেবে ট্রাস্টকে ওয়াকফ করে দিয়েছিলেন। এ নিয়ে দীর্ঘ ৫০০ বছর কোনো পশ্চিমা দেশ অথবা তাদের ধর্মীয় নেতারা কোনো প্রতিবাদ করেছেন বলে রেকর্ড নেই। কারণ, তাদের মূল ব্যাপারটি জানা ছিল। হয়তো তাদের কাছেও ঐতিহাসিক দলিল ছিল, যা তুরস্কের মিউজিয়ামে আজও সংরক্ষিত। তাহলে এখন কেন প্রতিবাদ করা হচ্ছে, অপবাদ দেয়া হচ্ছে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে? বাংলায় প্রবাদ আছে ‘যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা’। আয়া সোফিয়াকে আদালতের রায় অনুযায়ী মসজিদ হিসেবে চালু করে এরদোগানও কি ওই অবস্থার শিকার হলেন?

অবাক কাণ্ড হলো, পোপ ফ্রান্সিস তুরস্কের আদালত কর্তৃক একটি প্রতিষ্ঠিত সত্যকে কার্যকর করাতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। আমাদের প্রশ্ন, তিনি কি কোনো দিন গির্জা ও মসজিদকে মিউজিয়াম হিসেবে ব্যবহারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন? তার পূর্বসূরি খৃষ্টানরা স্পেনে বিশ্ববিখ্যাত কর্ডোভাসহ শত শত মসজিদকে মিউজিয়াম বানিয়েছেন। আজ পর্যন্ত কি তিনি এর প্রতিবাদ করেছেন? স্পেনে খৃষ্ট ধর্মের অনুসারীরা লাখ লাখ মুসলিম পুরুষ, মহিলা ও শিশুকে হত্যা করে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছে। মসজিদে যারা চুক্তি অনুযায়ী আশ্রয় নিয়েছিল, এমন একজন মুসলিমকেও রেহাই দেয়া হয়নি। বরং ধোঁকা দিয়ে মসজিদে একত্র করে সবাইকে আগুনে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। মরক্কো পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলে জাহাজে উঠিয়ে সবাইকে সাগরে ডুবিয়ে মেরে আজ তারা ‘এপ্রিল ফুল’ পালন করেন। কারণ দিনটি ছিল ১ এপ্রিল।

মুসলিমরা ‘ফুল’ ছিল না বা বোকামি করেনি। তারা চুক্তি বা ওয়াদা অনুসারেই মসজিদে আশ্রয় নিয়েছিল অথবা জাহাজে উঠেছিল। খ্রিষ্টান বিজয়ীরা চরম বেঈমানী করে মুসলিমদের হত্যা করে এবং এ জন্য এখনো আনন্দ-উল্লাস করে। এর চেয়ে নির্মম আর কী হতে পারে? পোপ বা তার পূর্বসূরিরা কি আজ পর্যন্ত তার অনুসারীদের সে দিনের জঘন্য অপকর্মের জন্য দুঃখ ব্যক্ত করেছেন? তিনি কি এই জঘন্য কাজের উদযাপন করাকে একটি বারের জন্য বারণ করার চেষ্টা করেছেন?

গ্রিস ও বুলগেরিয়া শত শত মসজিদকে গির্জা, নাইট ক্লাব বানিয়ে ফেলেছে, তার কি প্রতিবাদ বা দুঃখ প্রকাশ করছেন খৃষ্ট ধর্মগুরুরা? একইভাবে তুর্কি খিলাফতের পতনের পর আর্মেনিয়া, জর্জিয়া, রোমানিয়া, সার্বিয়া, ক্রোয়েশিয়াসহ অনেক দেশে মসজিদ-মাদরাসা ধ্বংস করা হয়েছে, সে জন্য তিনি কি দুঃখ প্রকাশ করছেন?

আয়া সোফিয়া নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স ও গ্রিস বেশি আহাজারি করছে। অথচ এই ফ্রান্সই মুসলিম অধ্যুষিত আলজেরিয়া দখল করে লাখ লাখ মুসলিমকে হত্যা করেছে, অসংখ্য মসজিদ গুঁড়িয়ে দিয়েছে। কোন ধর্ম বা নৈতিকতার জোরে এসব করেছিল? আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ দখল ও লুটপাট করে হীরা স্বর্ণ রুপা ইত্যাদি এনে নিজ দেশ গড়েছে। লাখ লাখ কালো মানুষকে দাস বানিয়ে ফ্রান্সে এনে অত্যাচার ও খুন করা হয়েছে। অনেককে পথিমধ্যে জাহাজে খাদ্য বা পানি না দিয়ে মেরে সাগরে ফেলে দেয়া হয়েছে। তারা আজ কিভাবে তুরস্কের একটি বৈধ কাজের প্রতিবাদ করে?

তুরস্ক গ্রিস ছেড়ে আসার পর শতাধিক মসজিদকে নাইট ক্লাব, মদের দোকান ও গির্জা বানানো হয়েছে। ফলে প্রায় ১০০ বছর গ্রিসে একটি মসজিদও ছিল না। সে সময় খৃষ্টানরা লাখ লাখ মুসলিমকে হত্যা করেছে, অবশিষ্টরা প্রাণে বেঁচে তুরস্কে পৌঁছেছে। পুরনো সভ্যতার দাবিদারদের এটাই নাকি সভ্যতা! তারাই এখন আয়া সোফিয়ার জন্য কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করছে।

পাঁচবার গ্রিসে গিয়ে দেখেছি, মুসলিমরা মসজিদের অভাবে অঘোষিত স্থানে কোনোভাবে নামাজ আদায় করছে। মোনাফেকরাই গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের দোকান খুলে বড় বড় কথা বলছে।
আজ তাদের দেশের অলিগলিতে শহরে বন্দরে চার্চগুলো খালি

অবস্থায় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। অনেকেই এখন স্বেচ্ছায় ইসলামের পবিত্র ছায়াতলে আশ্রয় নিচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে, এই শতাব্দী ইসলাম ও মুসলিমদের। এসব দেখে তাদের চোখে ঘুম নেই। ‘ইসলামোফোবিয়া’ দিয়ে ইসলাম ও মুসলিমদের জয়যাত্রা ঠেকানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে অনেকে। তাই মুসলিমদের ‘জঙ্গি জঙ্গি’ বলে ধ্বনি তুলে নিজ জাতিকে মুসলিম হওয়া থেকে বিরত রাখার অবিরত চেষ্টা চলছে। কিন্তু মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘সত্য সমাগত অসত্য বিতাড়িত। সত্যের জয় অবশ্যম্ভাবী।’
লেখক : লন্ডনপ্রবাসী ও সমাজকর্মী। ‘তুরস্কের প্রেসিডেন্ট

এরদোগান : সফলতার রহস্য’ বইয়ের লেখক

 


 

ko cuce /div>

দৈনিক নয়াদিগন্তের মাসিক প্রকাশনা

সম্পাদক: আলমগীর মহিউদ্দিন
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সালাহউদ্দিন বাবর
বার্তা সম্পাদক: মাসুমুর রহমান খলিলী


Email: online@dailynayadiganta.com

যোগাযোগ

১ আর. কে মিশন রোড, (মানিক মিয়া ফাউন্ডেশন), ঢাকা-১২০৩।  ফোন: ৫৭১৬৫২৬১-৯

Follow Us